২য় শ্রেণির ছাত্র আরিয়ানকে এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আইসিইউতে লড়তে হচ্ছে, কিন্তু এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর সবচেয়ে বড় প্রশ্নটি হলো—একটি স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কেন ব্যর্থ হলো?
৪ ডিসেম্বর চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের রামপুর দারুল হিকমা একাডেমিতে ঘটে যাওয়া এই মর্মান্তিক ঘটনায় স্তম্ভিত স্থানীয় প্রশাসন ও অভিভাবক মহল। ক্লাস চলাকালীন সময়ে কীভাবে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র আরিয়ান তিনতলা ভবনের ছাদে পৌঁছাল এবং সেখান থেকে পড়ে গুরুতর আহত হলো, সে বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা আসেনি। বৃহস্পতিবার দুপুরের এই দুর্ঘটনার পর তাকে দ্রুত চট্টগ্রাম পার্কভিউ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও, তার অবস্থা এখনো সংকটজনক।
আরিয়ানের পরিবার ঘটনার জন্য সরাসরি দারুল হিকমা একাডেমিকে দায়ী করেছে। তাদের অভিযোগ, যেখানে শিশুরা পড়াশোনা করতে আসে, সেখানে ছাদের মতো সংবেদনশীল জায়গায় প্রবেশ আটকাতে কিংবা পর্যাপ্ত নজরদারি নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠানের ন্যূনতম ব্যবস্থা ছিল না। পরিবার মনে করে, যদি প্রতিষ্ঠান তাদের দায়িত্বে বিন্দুমাত্রও সজাগ থাকত, তবে এই ভয়াবহ ঘটনা এড়ানো যেত। এই অবহেলা কেবল একটি দুর্ঘটনা নয়, বরং শিশুদের প্রতি দায়িত্বে চরম উদাসীনতা, যা একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য ক্ষমার অযোগ্য।
এই ঘটনা স্থানীয়দের মধ্যে শোকের পাশাপাশি তীব্র ক্ষোভেরও জন্ম দিয়েছে। সাধারণ মানুষ ও অভিভাবকরা প্রশ্ন তুলছেন: দুর্ঘটনার দায়ভার কি কেবল প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক অবহেলার, নাকি কোনো নির্দিষ্ট শিক্ষকের দায়িত্বহীনতাও এর জন্য দায়ী? একটি দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করা অপরিহার্য।
এলাকাবাসীর দাবি, শুধু এই একটি ঘটনার তদন্ত নয়, বরং সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশুদের সুরক্ষার কাঠামো পুনর্বিবেচনা করা হোক। প্রতিটি ছাদ, সিঁড়ির রেলিং এবং সংবেদনশীল প্রবেশপথে পর্যাপ্ত বাধা ও সার্বক্ষণিক নজরদারি জোরদার করতে হবে। আরিয়ানের এই পরিণতি যেন আর কোনো শিশুর জীবনে না আসে, তার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া এখন সময়ের দাবি।
আরিয়ানের পরিবার সন্তানের জন্য সবার কাছে আন্তরিকভাবে দোয়া চেয়েছেন এবং দ্রুত এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিচার নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
মন্তব্য করুন