
শান্ত সাগর আর মিষ্টি রোদের ঝলকানিতে আনন্দে মেতেছেন ভ্রমণপিপাসুরা। শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সাপ্তাহিক ছুটির দিনে দেশের দূর-দূরান্ত থেকে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে ছুটে এসেছেন হাজারো পর্যটক। তাদের সমুদ্রস্নানে নিরাপত্তায় সজাগ লাইফগার্ড কর্মীরা।
শীতের আগমনী আবহাওয়ায় সাগর অনেকটায় শান্ত। তাই সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ক্লান্তি ভুলে সাগরের বিশাল বালুচরের মাঝে আনন্দে মেতেছেন পর্যটকরা। সমুদ্রের নোনাজল আর আকাশের বিশালতার মাঝে খুঁজে নিচ্ছেন প্রশান্তি।
বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত। সাগরের টানে প্রতিনিয়ত ছুটে আসছেন হাজারো ভ্রমণপিপাসু।
সরেজমিন সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে দেখা যায়; হাজারো পর্যটক অবস্থান করছে সৈকতের বালিয়াড়ি ও নোনাজলে। ছোট ছোট ঢেউ যখন উপকূলে আসছে, তখন তাতে ঝাঁপ দিয়ে আনন্দে মেতেছেন ভ্রমণপিপাসুরা। অনেকেই আবার টিউবে গা ভাসিয়েছেন। তবে জেড স্কী করে অনেকে ঘুরে আসছেন গভীর সাগরে।
এদিকে বালিয়াড়িতেও আনন্দ-উচ্ছ্বাসের কমতি নেই ভ্রমণপিপাসুদের। পরিবার-পরিজন নিয়ে বালুচরে ছোট শিশুর সঙ্গে খেলা করছেন। কেউবা ঘোড়ার পিঠে চড়ার পাশাপাশি তুলছেন ছবি। অনেকেই বিচ বাইকে চড়ে বালিয়াড়ির এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত ঘুরছেন। আবার কেউ কেউ বালিয়াড়ির কিটকটে বসে সমুদ্র উপভোগ করছেন।
গাজীপুর থেকে আসা হাফিজুর রহমান বলেন, “কিটকটে বসে সমুদ্র উপভোগের মজাই আলাদা। এখানে বসে যেমন নীল সমুদ্র দেখছি তেমনি বিশাল বালিয়াড়ির বিশাল আকাশ দেখতেও খুব উপভোগ করছি।”
আরেক পর্যটক ইব্রাহীম কাদের বলেন, “বালুচরে ছোট মেয়ের সঙ্গে খেলছি। মনে হচ্ছে, আমিও ছোট হয়ে গেছি। আর বিশেষ করে ছোট বেলার কথা মনে পড়ছে।”
সাভার থেকে আসা পর্যটক রায়হান আজিম বলেন, সমুদ্র সবসময় কাছে টানে। তাই ছুটে পেলেই কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে আসার চেষ্টা করি। এখনও কয়েকজন বন্ধু মিলে কক্সবাজার ছুটে এসেছি এবং নোনাজলে বেশ আনন্দ করছি।
শীত মৌসুমের শুরুতেই সৈকত শহর কক্সবাজারে পর্যটকদের পদচারনায় বাড়ায় বেশ খুশি সৈকতপাড়ের ব্যবসায়ীরা।
বলছেন, এ মৌসুমে জমে উঠবে ব্যবসা- এমনই আশা করছেন তারা।
সৈকতের জেড স্কী চালক সাদ্দাম বলেন, মৌসুমের শুরুতেই পর্যটকের আগমন বাড়ছে। এতে ব্যবসাও ভাল হচ্ছে। আশা করি, সামনের দিনগুলোতেও পর্যটকের আগমন আরও বাড়বে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যও ভাল হবে।
ঝিনুক ব্যবসা কামাল বলেন, আমরা সবসময় বসে থাকি পর্যটন মৌসুমের জন্য। এখন মৌসুমের শুরুতেই পর্যটকের আগমন বাড়ছে। আশা করি, এবছর পর্যটন মৌসুমটা ভাল যাবে।
পর্যটকদের সমুদ্রস্নানে নিরাপত্তায় ৩টি পয়েন্টে নিয়োজিত রয়েছেন ২৭ জন লাইফগার্ড কর্মী। সী সেফ লাইফগার্ড সংস্থার সিনিয়র লাইফগার্ড মোহাম্মদ সাদেক বলেন, পর্যটকের আগমন বেড়েছে। তাই আমাদের তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে। ৩টি পয়েন্টে ২৭ জন লাইফ গার্ড কর্মী কাজ করছে। তার পাশাপাশি ৩০ জন স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে। যারা প্রতিনিয়ত পর্যটকদের নানা নির্দেশনা মেনে চলার জন্য মাইকিং থেকে শুরু করে পর্যটকদের সঙ্গে কথা বলছে।
এদিকে, কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পহেলা নভেম্বর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি থাকলেও, রাত্রি যাপনের অনুমতি না থাকায় গত ১৪ দিনে এখান থেকে ছাড়েনি কোনো জাহাজ।
মন্তব্য করুন