
কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা এবং খতমে নবুয়তের আকিদা রক্ষার দাবিতে শনিবার ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদের আয়োজনে এই সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখো মানুষের সমাগম ঘটে, যা উদ্যানকে এক জনসমুদ্রে পরিণত করে।
সকাল ৯টায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়া এই সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা পায়ে হেঁটে, ব্যক্তিগত গাড়ি, বাস এবং মেট্রোরেলে করে যোগ দেন। সম্মেলনে তাহরীকে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের আমির আল্লামা মুফতি ড. সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী জোরালো বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, সংবিধানে যদি মুসলমানদের মৌলিক দাবি পূরণ না করা হয়, তবে সেই সংবিধান গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি আরও বলেন, ‘দেশের প্রকৃত মালিক যে প্রকৃত মুসলমান। তাদের ট্যাক্স আর ভ্যাটের টাকায় সরকারের মন্ত্রীদের গাড়ির পেট্রোল জ্বলে সেই মুসলমানদের মৌলিক দাবি যদি সংবিধানে আদায় না করা হয় তাহলে সেই সংবিধানও আমরা মানি না।’
এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী খতমে নবুওয়তের বিশ্বাসের ব্যাখ্যা করে বলেন, দেড় হাজার বছর আগে আল্লাহ তাঁর হাবিবকে পাঠিয়ে নবুয়তের দরজা চিরতরে বন্ধ করে দিয়েছেন এবং এই বিশ্বাস ছাড়া কেউ মুসলিম হতে পারে না। তিনি সেক্যুলার রাজনীতির সমালোচনা করে বলেন, প্রচলিত রাজনীতির সঙ্গে জড়িতরা কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা করতে চায় না।
সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদের আহ্বায়ক ও খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ কমিটির আমির মাওলানা আবদুল হামিদের (পীর সাহেব, মধুপুর) সভাপতিত্বে এই মহাসম্মেলনে দেশ-বিদেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ থেকে সম্মেলনে যোগ দেন হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ মুহিববুল্লাহ বাবুনগরী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মাওলানা রেজাউল করিম (চরমোনাই পীর), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, আল হাইয়াতুল উলিয়ার চেয়ারম্যান মাওলানা মাহমুদুল হাসান এবং বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি মুহাম্মদ আব্দুল মালেকসহ অর্ধশতাধিক বিশিষ্ট আলেম।
বিদেশি অতিথিদের মধ্যে ছিলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম পাকিস্তানের সভাপতি মুফতি ফজলুর রহমান, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সভাপতি মাওলানা সাইয়্যিদ মাহমুদ মাদানি, পাকিস্তানের মাওলানা হানিফ জালন্দরি, ইন্টারন্যাশনাল খতমে নবুওয়ত মুভমেন্টের ওয়ার্ল্ড নায়েবে আমির শায়খ আব্দুর রউফ মক্কি, দারুল উলুম দেওবন্দের মুহতামিম মুফতি আবুল কাসেম নোমানী এবং মিসরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শায়খ মুসআব নাবীল ইবরাহিমসহ আরও অনেকে।
মন্তব্য করুন