
ভেনেজুয়েলা সরকার জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো ধরনের হামলা সামরিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তাদের সশস্ত্র বাহিনীকে প্রস্তুত রাখছে। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) ভেনেজুয়েলার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভ্লাদিমির পাদ্রিনোর দেওয়া এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, এই প্রস্তুতির মধ্যে রয়েছে, স্থল, আকাশ, নৌ, নদী এবং ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যাপক মোতায়েন। পাশাপাশি পুলিশ, মিলিশিয়া এবং নাগরিক ইউনিটের অংশগ্রহণও থাকছে। খবর আল জাজিরার।
এই ঘোষণা এমন এক সময় এলো যখন এই অঞ্চলে মার্কিন বিমানবাহী রণতরি জেরাল্ড ফোর্ডের লাতিন আমেরিকা অঞ্চলে প্রবেশ করা নিয়ে উত্তেজনা চলছে। গুঞ্জন উঠেছে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের দীর্ঘদিনের শত্রু নিকোলা মাদুরো সরকারকে উৎখাত করতে ভেনেজুয়েলায় সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে। আর এর মধ্যে ভেনেজুয়েলা তাদের সশস্ত্র বাহিনীকে প্রস্তুত করার কথা বলল।
ডোনাল্ড ট্রাম্প গত জানুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ভেনেজুয়েলা ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন নিশ্চিত করেছে যে, বিশ্বের বৃহত্তম বিমানবাহী রণতরী জেরাল্ড আর ফোর্ড ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ কমপক্ষে চার হাজার নাবিক এবং ‘কৌশলগত বিমান’ নিয়ে ক্যারিবিয়ান সাগরে পৌঁছেছে।
গত কয়েক সপ্তাহে প্রশিক্ষণ মহড়া এবং অন্যান্য অভিযানের জন্য পুয়ের্তো রিকো, এল সালভাদর, পানামা এবং ত্রিনিদাদ ও টোবাগোসহ ক্যারিবীয় অঞ্চলের কাছাকাছি অঞ্চলে সেনা উপস্থিতি বৃদ্ধি করেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।
ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, তারা অবৈধ মাদক পাচার ব্যাহত করতে এবং দেশ রক্ষা করার জন্য সেনা মোতায়েনের প্রয়োজনীয়তা ছিল। ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা মাদুরোকে ভেনেজুয়েলার একটি গ্যাং ট্রেন ডি আরাগুয়ার কার্যকলাপের মূল পরিকল্পনাকারী বলেও অভিযুক্ত করেছেন। যদিও যুক্তরাষ্ট্রে এ গ্যাংয়ের উপস্থিতি তুলনামূলক কম।
কিন্তু মাদুরো এবং তার মিত্ররা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘সাম্রাজ্যবাদী’ লক্ষ্যের অভিযোগ এনেছে। তবে ভেনেজুয়েলা মার্কিন সামরিক অগ্রগতি প্রতিহত করতে সক্ষম হবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে।
গত ২ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় সাগরে নৌযান লক্ষ্য করে একের পর এক হামলা শুরু করার পর থেকে ওই অঞ্চলে সেনা মোতায়েন বৃদ্ধি করা হয়েছে।
এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় সাগর ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে কথিত মাদক চোরাচালানি জাহাজ লক্ষ্য করে কমপক্ষে ১৯ বার বিমান হামলা চালিয়েছে। এসব হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ৭৫ জন নিহত হয়েছেন।
ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, পরবর্তী ধাপে স্থল হামলাও চালানো হতে পারে। তবে অক্টোবরের শেষ দিকে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তিনি ভেনেজুয়েলার ভেতরে হামলার কথা ভাবছেন কি না। তখন ট্রাম্প উত্তরে বলেছিলেন, ‘না’।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভেনেজুয়েলায় কোনো সামরিক হামলা চালানো হলে তা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হতে পারে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ইউগভের সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৪৭ শতাংশ মানুষ ভেনেজুয়েলার ভূখণ্ডে স্থল হামলার বিরোধিতা করেছেন। মাত্র ১৯ শতাংশের মতো মানুষ বলেছেন, তাঁরা এমন হামলাকে সমর্থন করবেন।
ভেনেজুয়েলার সশস্ত্র বাহিনী মাদুরোর প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। বলেছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো হামলার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভেনেজুয়েলা সরকার সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য পর্যাপ্ত খাবার ও সরঞ্জাম সরবরাহে হিমশিম খাচ্ছে।
অতিরিক্ত আধা সামরিক বাহিনী ও পুলিশ বাহিনী ব্যবহারের সিদ্ধান্তকে বিশ্লেষকেরা দেখছেন দেশের দুর্বল সামরিক সক্ষমতা পূরণের একটি চেষ্টা হিসেবে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সরকারের একটি অভ্যন্তরীণ নথিতে প্রায় ২৮০টি স্থানে ছোট ছোট ইউনিট গঠনের পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যেখানে তারা যেকোনো সম্ভাব্য মার্কিন আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি প্রতিরোধ গড়ে তুলতে নাশকতা ও গেরিলা কৌশল ব্যবহার করতে পারবে।
🔴প্রধান উপদেষ্টাঃ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ভুট্টো, 🔴নির্বাহী সম্পাদক ও প্রকাশকঃ এম জুনাইদ উদ্দিন, বার্তা সম্পাদকঃ এইচ এম হাছিব তাজোয়ার
News Mail: dainikpathakkanta@gmail.com, Head Office: Hathirpul, Motaleb plaza nearest, Dhaka, Cox'sBazar( Chakaria) Office: SabujBag Haji Laila Mention, Chakaria Pourashova.
Design and Develop By Coder Boss